আফাজ উদ্দিনের (কালা হুজুর ) তাবলীগের কাজে ভূমিকা।

 

আফাজ উদ্দিন কালা হুজুরের সংক্ষিপ্ত জীবন নিয়ে কিছু কথাঃ-  আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ  একজন সম্মানিত ব্যক্তি ও আদর্শবান মানুষকে নিয়ে আমার এই লেখনী ---   ( ভুল ত্রুটি - ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)  আমার পাশে বসে আছেন, মাওলানা আফাজ উদ্দিন ( কালা হুজুর)  উনি আর বেচে নেই, দিন কয়েক পূর্বে সহস্রাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা উনার জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ করেছে। উনার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে নিমোক্ত লেখনী পাঠ করবেন।  মাওলানা আফাজ উদ্দিন একজন আদর্শবান , পরহেজগার ও খোদাভীরু লোক ছিলেন।  উনার সমস্ত জীন্দেগী আল্লাহ্ তায়ালার ইবাদত বন্দেগী করে কাটিয়েছেন। লোকদেরকে বুঝিয়ে ছমজায়ে মসজিদের দিকে এনে নামাজে দাড় করিয়ে দেওয়াটাই ছিলো উনার একমাত্র কর্তব্য।   তাই ছোট্ট বেলা থেকে দেখে আসছি , শুনেও আসছি উনি সবসময়ই তাবলীগ জামাতে যাওয়ার জন্য মুসলমান ভাইদের তশকিল করতেন, যারা যেতে চায় নি, তাদেরকে বুঝিয়ে মসজিদে আনতেন।    পরিবারের কথা না ভেবে জীবনের মহামূল্যবান সময় গুলো তাবলীগের কাজে অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায় সময় লাগিয়ে গেছেন।   আমার জানা মতো, উনি একমাত্র পরহেজগার ও পরিশ্রমী ব্যাক্তি ছিলেন, যে কিনা যৌবনকাল থেকে বৃদ্ধ বয়স পেরিয়ে মৃত্যুর পূর্বমুহুর্তেও তাবলীগ জামাতের মানুষের সঙ্গে থাকছেন।  উনার পরিশ্রমে অনেক গোমরাহী ও বেনামাজী সাথীরা তাবলীগে সময় লাগিয়েছে, এখন তারা দাড়ি রাখে ,টুপি পরিধান করে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে। এলাকা থেকে ব'দ্বীনি, নাফরমানী, মারামারি, ও পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তি হয়েছে । চলে এসেছে " শান্তি , ও ভাতৃত্ববোধ । তৈরী হয়েছে দ্বীনদার, নামাজী, আল্লাহ্ভীরু ও সত্যবাদী মানুষ।  প্রত্যেক নামাজের পরে দোয়া করতেন, মাঝরাতে প্রতিনিয়তই তাহাজ্জুদ পড়তেন, পরে নামাজ শেষে রাতের আধারে অশ্রুভেজা নয়নে আল্লাহর কাছে দু'হাত তুলে কান্নাকাটি করতেন।  উনি আল্লাহর ভয়ে এতো কাদতেন, এতো কাদতেন যে, উনার হাতটা ভেদ করে পাঞ্জাবি ভিজে যেতো ।  একটা সময় কাদতে কাদতে উনার চোখের আলো হারিয়ে গেছে।   চোখে দেখতে পেতেন না। তাই বলে আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী থেকে নিরাশ হন নি। এ অবস্থায় উনি দিনের পর দিন বছরের পর বছর তাবলীগ করে গেছেন, মসজিদে বয়ান করতেন। দ্বীনি কথাবার্তা বলতেন।   সৎ পথে থাকার কথা ও অসৎ পথ থেকে বিরত থাকার কথা, এবং আল্লাহ্ তায়ালার হুকুম ও রাসুল (সাঃ) এর তরীকা মত চলার কথা বেশীই বলতেন ।   একদিন উনার সংস্পর্শে তাবলীগ জামাতে সময় লাগানোর সৌভাগ্য হয়েছে আমার। উনি উক্ত জামাতের আমির ছিলেন । আমি উনাকে অনুসরণ করেছি, দেখেছি উনার সম্বন্ধে জেনেছি।  উনি চোখে দেখতেন না, তথাপি কারো সাহায্য ব্যাতিত ইস্তিঞ্জায় যেতেন, আসতেন। উনাকে সেদিন একটা কথা বলেছিলাম, উনি আমার কথা শুনে হাসি মুখে উত্তর দিয়েছিলেন, " বাহ্যিক চোখ নেই তো কী হয়েছে , তবে অন্তরের চোখ দিয়ে আল্লাহকে দেখতে পাওয়া যায় "  -- আলহামদুলিল্লাহ বলে চলে আসলাম ।   মরহুমমের পাঁচ ছেলেরা হাফিজ মাওলানা মুফতি পর্যায়ে আছে, উনার ছেলেদের মধ্যে মাওলানা ক্বারী ওলীউর রহমান তাবলীগের কাজটি ধরে রেখেছেন। দিনব্যাপী তাবলীগের কাজের প্রতি আগ্রহী, ও মজবুত। তিনি আমার শৈশবকালীন উস্তাদ ছিলেন ।  মরহুম আফাজ উদ্দিন হুজুরের এমন আত্মত্যাগ কখনো ভুলে যাওয়ার মতো নয়।   উনি বেচে আছেন আমাদের হৃদয়ে, বেঁচে আছেন সব সাথীদের অস্তিত্বে। করাঙ্গুলি প্রদর্শন করে যে তেজ দীপ্ত ও বিনয়ের সাথে আল্লাহ তায়ালার পথ দেখিয়ে ছিলেন , এজন্য আমরা তাকে প্রাণভরে শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করবো সবসময়ই ।  বিশেষ করে, দ্বীনের দাওয়াতের ক্ষেত্রে উনার ভুমিকা অপরীসীম ।   আল্লাহ্ উনাকে ক্ষমা করে দিন, জান্নাতের সর্বোচ্চ মাক্বাম দান করুন। আমিন।   ("ছাকাল্লাহু ছারাহু ওয়া'জা'লাল জান্নাতা মাছ'ওয়ায়ু"")  -  -- 👉 লিখেছেনঃ মোঃ হামিদুল ইসলাম

আফাজ উদ্দিন কালা হুজুরের সংক্ষিপ্ত জীবন নিয়ে কিছু কথাঃ-

আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ

একজন সম্মানিত ব্যক্তি ও আদর্শবান মানুষকে নিয়ে আমার এই লেখনী ---

 ( ভুল ত্রুটি - ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)

আমার পাশে বসে আছেন, মাওলানা আফাজ উদ্দিন ( কালা হুজুর)

উনি আর বেচে নেই, দিন কয়েক পূর্বে সহস্রাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা উনার জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ করেছে। উনার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে নিমোক্ত লেখনী পাঠ করবেন।

মাওলানা আফাজ উদ্দিন একজন আদর্শবান , পরহেজগার ও খোদাভীরু লোক ছিলেন।

উনার সমস্ত জীন্দেগী আল্লাহ্ তায়ালার ইবাদত বন্দেগী করে কাটিয়েছেন। লোকদেরকে বুঝিয়ে ছমজায়ে মসজিদের দিকে এনে নামাজে দাড় করিয়ে দেওয়াটাই ছিলো উনার একমাত্র কর্তব্য। 

তাই ছোট্ট বেলা থেকে দেখে আসছি , শুনেও আসছি উনি সবসময়ই তাবলীগ জামাতে যাওয়ার জন্য মুসলমান ভাইদের তশকিল করতেন, যারা যেতে চায় নি, তাদেরকে বুঝিয়ে মসজিদে আনতেন। 

 পরিবারের কথা না ভেবে জীবনের মহামূল্যবান সময় গুলো তাবলীগের কাজে অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায় সময় লাগিয়ে গেছেন। 

আমার জানা মতো, উনি একমাত্র পরহেজগার ও পরিশ্রমী ব্যাক্তি ছিলেন, যে কিনা যৌবনকাল থেকে বৃদ্ধ বয়স পেরিয়ে মৃত্যুর পূর্বমুহুর্তেও তাবলীগ জামাতের মানুষের সঙ্গে থাকছেন।

উনার পরিশ্রমে অনেক গোমরাহী ও বেনামাজী সাথীরা তাবলীগে সময় লাগিয়েছে, এখন তারা দাড়ি রাখে ,টুপি পরিধান করে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে। এলাকা থেকে ব'দ্বীনি, নাফরমানী, মারামারি, ও পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তি হয়েছে । চলে এসেছে " শান্তি , ও ভাতৃত্ববোধ । তৈরী হয়েছে দ্বীনদার, নামাজী, আল্লাহ্ভীরু ও সত্যবাদী মানুষ।

প্রত্যেক নামাজের পরে দোয়া করতেন, মাঝরাতে প্রতিনিয়তই তাহাজ্জুদ পড়তেন, পরে নামাজ শেষে রাতের আধারে অশ্রুভেজা নয়নে আল্লাহর কাছে দু'হাত তুলে কান্নাকাটি করতেন।

উনি আল্লাহর ভয়ে এতো কাদতেন, এতো কাদতেন যে, উনার হাতটা ভেদ করে পাঞ্জাবি ভিজে যেতো ।

একটা সময় কাদতে কাদতে উনার চোখের আলো হারিয়ে গেছে। 

চোখে দেখতে পেতেন না। তাই বলে আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী থেকে নিরাশ হন নি। এ অবস্থায় উনি দিনের পর দিন বছরের পর বছর তাবলীগ করে গেছেন, মসজিদে বয়ান করতেন। দ্বীনি কথাবার্তা বলতেন। 

সৎ পথে থাকার কথা ও অসৎ পথ থেকে বিরত থাকার কথা, এবং আল্লাহ্ তায়ালার হুকুম ও রাসুল (সাঃ) এর তরীকা মত চলার কথা বেশীই বলতেন । 

একদিন উনার সংস্পর্শে তাবলীগ জামাতে সময় লাগানোর সৌভাগ্য হয়েছে আমার। উনি উক্ত জামাতের আমির ছিলেন । আমি উনাকে অনুসরণ করেছি, দেখেছি উনার সম্বন্ধে জেনেছি।

উনি চোখে দেখতেন না, তথাপি কারো সাহায্য ব্যাতিত ইস্তিঞ্জায় যেতেন, আসতেন। উনাকে সেদিন একটা কথা বলেছিলাম, উনি আমার কথা শুনে হাসি মুখে উত্তর দিয়েছিলেন, " বাহ্যিক চোখ নেই তো কী হয়েছে , তবে অন্তরের চোখ দিয়ে আল্লাহকে দেখতে পাওয়া যায় "

-- আলহামদুলিল্লাহ বলে চলে আসলাম । 

মরহুমমের পাঁচ ছেলেরা হাফিজ মাওলানা মুফতি পর্যায়ে আছে, উনার ছেলেদের মধ্যে মাওলানা ক্বারী ওলীউর রহমান তাবলীগের কাজটি ধরে রেখেছেন। দিনব্যাপী তাবলীগের কাজের প্রতি আগ্রহী, ও মজবুত। তিনি আমার শৈশবকালীন উস্তাদ ছিলেন ।

মরহুম আফাজ উদ্দিন হুজুরের এমন আত্মত্যাগ কখনো ভুলে যাওয়ার মতো নয়। 

উনি বেচে আছেন আমাদের হৃদয়ে, বেঁচে আছেন সব সাথীদের অস্তিত্বে। করাঙ্গুলি প্রদর্শন করে যে তেজ দীপ্ত ও বিনয়ের সাথে আল্লাহ তায়ালার পথ দেখিয়ে ছিলেন , এজন্য আমরা তাকে প্রাণভরে শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করবো সবসময়ই ।

বিশেষ করে, দ্বীনের দাওয়াতের ক্ষেত্রে উনার ভুমিকা অপরীসীম । 

আল্লাহ্ উনাকে ক্ষমা করে দিন, জান্নাতের সর্বোচ্চ মাক্বাম দান করুন। আমিন। 

("ছাকাল্লাহু ছারাহু ওয়া'জা'লাল জান্নাতা মাছ'ওয়ায়ু"")

-

-- 👉 লিখেছেনঃ মোঃ হামিদুল ইসলাম

Post a Comment

0 Comments