বয়ফ্রেন্ডের সাথে ঘুরতে বের হলে এমন কোনোদিন ছিলোনা সে আমার লজ্জা স্থানে হাত দেয়নি।

একসময় আমি অনেক ছেলেদের হাত দরে ঘুরেছি। 

অনেক ছেলেকেই আমার গায়ে স্পর্শ করতে দিয়েচি। বয়ফ্রেন্ডের সাথে ঘুরতে বের হলে এমন কোনোদিন ছিলোনা সে আমার লজ্জা স্থানে হাত দেয়নি। অনেকবার বেডেও গিয়েছি। সারাদিন পার্কে ঘুরেফিরে রাত রাত বিভিন্ন পার্টিতে আড্ডা দিয়েছি। ড্রিংকস খেয়েছি। নেচেছি, গেয়েছি, মাতাল অবস্থায় ঘরে ফিরেছি। বাবা-মায়ের একমাত্র আদরের মেয়ে ছিলাম বলে কিছু বলার সাহস পায়নি।


শেষ কবে নামাজ পড়েছি মনে নেই। নামাজ পড়ে কিভাবে পড়ার নিয়মটাও যানা ছিলোনা। কখনো রোজা রাখিনি স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে বলে।


ভার্সিটিতে গেলে কখনো বুকে ওড়না দেইনি। উদাম বুকেই চলাফেরা করেছি। বোরকা বিহীন উদাম বুকে অনেক ছেলের চোখের ধর্ষণের শিকার হয়েছি। গর্ব ভরে বুক উচু রেখে আপত্তিকর পোশাক পরে ছেলেদের কামুকতার নজরে পড়েছি। সবসময় ছেলে বন্ধুদের সাথে ঘাঁ ঘেঁষে থেকেছি। আঁটসাঁট জামা পড়ে শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গগুলো আরো আকর্ষণীয় করে ফুটিয়ে তুলেছি।


মার্কেটে গেলে এমনভাবে হেটেছি যেনো ছেলেরা ধাক্কা দেয়। অনেক ছেলেকেই জিনা করতে বাধ্য করেছি। বেডে যাওয়ার কিছুদিন পর পর বয়ফ্রেন্ড চেঞ্জ করেছি।

ক্ষনিকের এই পৃথিবীতে আমার সাধ্যের মধ্যে এমন কোনো কাজ ছিলোনা যা আমি করিনি।


কিন্তু, এতোদিন যা যা করেছি সব পাপের শাস্তি আমি পাচ্ছি। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে! কেউ আমাকে আরেকটিবার পৃথিবীতে যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছেনা! ৫০ বছর হয়ে গেলো, এখনো আমার একটি পাপের (জিনার) শাস্তি শেষ হয়নি! আমার পেটে একটা বাচ্চা মাথা বাহিরে বের করে আছে প্রসব হচ্ছেনা। বাচ্চাটি কোনো কান্না করেনা। আমাকে মুক্তি দিচ্ছেনা। খুব কষ্ট হচ্ছে! সাধারণত একজন মা সন্তান প্রসব করার সময় বিশটা হাড় একসাথে ভেঙে গেলে যতটা কষ্ট হয় তার চেয়েও বেশি প্রসবব্যাথা সহ্য করতে হয়। আমার জন্যে দোয়া করো। আল্লাহ যেনো আমায় ক্ষমা করে দেন। আর আমার.....


হাঠাৎ জামাইয়ের ডাকে ঘুম ভেঙ্গে গেলো। 

-"এই তুমি কার সাথে কথা বলতেছো?"

তাহলে এসব আমার স্বপ্ন ছিলো। আমার মতইতো কেউ একজন আমাকে এসব বলেছিলো। কথাটি ভেবে কান্না করতে করতে ওয়াশরুমে চলে গেলাম। জামাই আমার পিছনে পিছনে চলে এলো। কারণ জানতে চাইলো! বলিনি! ওজু করে তাহাজ্জুদ নামাজে দাড়িয়ে গেলাম। নামাজ শেষে মুনাজাত ধরে কাঁদতে থাকলাম;-


হে আমার রব, তুমিইতো বলেছিলে তুমি অত্যন্ত দয়ালু, ক্ষমাশীল, তুমি কাউকে ফিরিয়ে দাওনা। আমি ভালো হয়ে গেছি। এখন আর কোনো বেগানা পুরুষের সাথে অবাধে মিলামেশা করিনা। হে আমার মালিক, বান্দার চোখের পানির সাথে নাকি সব গুনাহ তুমি ধুয়ে দাও। হে আমার মালিক, তুমি আমায় ক্ষমা করো। তুমি ক্ষমা না করলে কার কাছে যাবো মালিক কার কাছে যাবো? তুমিতো তোমায় ডাকলে তাকে নিরাশ করোনা। তুমি আমায় মাফ করো। এই পৃথিবীর সামান্য আগুন সহ্য করার ক্ষমতা আমাকে দাওনি, কিভাবে আমি পরকালে তোমার আজাব সহ্য করবো? আমায় মাফ করা ছাড়া আজরাইল (আঃ) পাঠিওনা। তোমার দরবারে নিওনা। 

শেষ রাতের বান্দার দোয়া তুমিতো কবুল না করে পারোনা। আমার জন্যে তোমার কোনো দয়া হয়না মালিক! আমায় ক্ষমা করা ছাড়া আজ আমি নামাজের বিছানা থেকে উঠবোনা! আজ তুমি আমায় ক্ষমা করতেই হবে।


মুয়াজ্জিন ফজরের আজান দিলো। নামাজে দাঁড়িয়ে গেলাম। নামাজ শেষে আবারও মহান প্রভুর দরবারে ক্ষমা চাইতে লাগলাম। কান্না করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম টেরই পাইনি। কিছুক্ষণ পর জামাইর কান্নায় আমার ঘুম ভাঙ্গলো। আমার আর তার জন্যে কান্না করতে করতে মহান প্রভুর কাছে ক্ষমা চাইতে লাগলো। 

আল্লাহ সবাইকে ক্ষমা করুক। সবাইকে দ্বীনের পথে কবুল করুক, সঠিক বুঝ দান করুন। সাথে আমাকেও।


দুনিয়ার মোহে পড়ে আমরা আজ, আমাদের ভবিষ্যতকে ভুলে গিয়েছি লিপ্ত হয়েছি গুনাহের কাজে। ভুলে গিয়েছি সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন আমাকে আপনাকে আমাদের সবাইকে পরকালে দাঁড়াতে হবে! হিসেব দিতে হবে প্রতিটি সেকেন্ডের। আসুন সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই। মনে রাখবেন, আল্লাহর ক্ষমা ছাড়া এই দুনিয়া থেকে যদি মরে যান তাহলে আফসোসের কোনো শেষ থাকবেনা। ভোগ করতে হবে পরকালের প্রতিটি আজাব। তাই মৃত্যুকে স্বরন করুন।


কোন সন্দেহ নেই, মানুষ যদি তার অন্তরে যথাযথভাবে মৃত্যুচিন্তাকে জাগ্রত করে তাহলে এটা তার জীবনে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসবে। ফলে সে তার জীবনের অবশিষ্ট দিনগুলোতে নেক আমলে ডুবে থাকবে যার পরিপ্রেক্ষিতে সে অতীত জীবনের সকল পাপ-পঙ্কিলতা থেকে পবিত্র হয়ে যাবে। এজন্য "মানুষ মরনশীল এবং আমাকেও মরতে হবে" এতটুকু ভাবনা থাকাই যথেষ্ট নয়, বরং দরকার সবসময়ের জন্য মুক্তচিন্তার একটা পূর্ণাঙ্গ রুপরেখা সামনে থাকা।


কুরআন মাজীদ মৃত্যু-ভাবনাকে যেভাবে আমাদের সামনে পেশ করা হয়ছে তা হলো;-

"প্রত্যেককেই মৃত্যুবরন করতে হবে। মৃত্যু মানে চিরতরে ধ্বংস হয়ে যাওয়া নয়। মৃত্যু দ্বারা মানুষ ইহজীবন হতে পরজীবনে স্থানান্তরিত হয়। তারপর রয়েছে পরলোক। সেখানে ইহজীবনের কর্ম অনুযায়ী ফল ভোগ করতে হবে।"


মহান আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন;-


"কুল্লুন্ নাফসীন যা'ইকাতুল মা'উত ছুম্মা ইলাইনা্ তুরজা'উন।"


"প্রত্যেককেই মৃত্যুর স্বাদ ভোগ করতে হবে। তারপর তোমরা আমারই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে।"(আনকাবুত-৫৭)

copyrigh......

Post a Comment

0 Comments