আজ রাতে আমার সাথে যা হয়েছে তা যেনো অন্য কোনো ছেলে বা মেয়ের সাথে না ঘটে।
ঘড়ির কাঁটার দিকে কোনো খেয়ালই করিনি,
ফিজিক্স বই পড়তে পড়তে রাত তখন বারটা বেজেছিল,
ঘুম আসছে না, কারণ দিনে অর্ধেক সময় নিয়ে ঘুমিয়েছি, তাছাড়া অনেক্ষণ ধরে কারেন্ট নেই, উফ অসহ্য গরম, গরমের যন্ত্রণায় সিড়ি বেয়ে নিচের দিকে ছুটতে লাগলাম ,
অন্যদিনের চেয়ে আকাশের অবস্থা ভালো ছিলো না, আকাশে ভয়ংকর ডাক ও বিদ্যুৎ চমকানো শব্দে দেহটা শির শির করতে লাগলো, ঘন ঘন অন্ধকারে বেষ্টিত চতুর্দিক।
মানবশূন্য নিবিড় রাতে একাকী বিমর্ষ মনে রাস্তার দিকে হাটতে হাটতে কখন যে একটা বটতলায় পৌছে যাবো সেদিকে কোনো লক্ষ করিনি,
ঘন আধারে চারিদিকে মৃদু বাতাসের ঝলকানির শব্দ এবং উচ্ছ্বসিত বিকট শব্দ শুনেই ভয়ে থরথর করে কাঁপতে লাগলাম।
বটতলা থেকে একটা মেয়ের কন্ঠস্বর শুনে হতবাক ও উদ্বিগ্ন হয়ে গেলাম,
""এতো রাতে মেয়েটি এখানে কি করছে?
হতে পারে কোনো ভূত প্রেত্নী।
সেখানে যাওয়া আমার উচিত হবে না""
মেয়েটিকে নিয়ে হরেকরকম প্রশ্ন মনের মধ্যে জাগলো,
প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে নিজেকে সামলাতে না পেরে মেয়েটির কাছে গিয়ে দেখতে পেলাম,
একটা রুপবান রূপবতী পূর্ণবয়স্ক সুদর্শন মেয়ে।
কুয়াশায় আচ্ছাদিত আধারে মেয়েটির চেহারা সৌন্দর্যে ঝলমল করছে, সে যেনো এক মায়াপরী।
ওর চেহারার মধ্যে স্পষ্ট ভয়ের চাপ লক্ষ করছি,
আর লক্ষ্য করছি মেয়েটি ব্যাকুল হয়ে মিষ্টি সুরে কাঁদছে,
কাছে আসতেই মেয়েটি কাদোসুরে তাড়াহুড়ো করে বলতে লাগলো, ""প্লিজ আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলো,
আমি বাড়িতে যেতে চাই""।
তার কথা শুনে বুঝতে বাকি রইল না যে, সে বিষণ বিপদে পড়েছে।
"""তুমি এখানে কীভাবে আসলে? তোমার ঠিকানা কোথায়?
""চল সব বলছি
ওর কাছ থেকে এক এক করে সব কথা শুনলাম।
" (শান্তনা দিতে গিয়ে) তোমার কোনো সমস্যা হবে না, আমি নিজে তোমাকে বাড়িতে পৌছে দিয়ে আসবো।
মেয়েটি অশ্রুভেজা চোখে আলতো করে একটা মায়া আমার নরম দুটি গালে বসিয়ে দিলো। অবাক চোখে তাকিয়ে দেখলাম ,
মেয়েটা কিছু হলেও একটু স্বস্তি ফিরে পেয়েছে।
আর বিলম্ব না করে তার কাছ থেকে নির্দিষ্ট ঠিকানা জেনে তাকে বাড়িতে পৌছে দেওয়ার জন্য অনেক্ষণ ধরে গাড়ীর অপেক্ষা করছি।
হঠাৎ মেয়েটির প্রচন্ড আওয়াজে চিৎকার শুনতে পেলাম,
" বাচাও, আমাকে বাঁচাও ,
ওরা আমাকে মেরে ফেলবে""
পেছন দিকে গাঢ় নাড়িয়ে দেখতে পেলাম
একটা কালো গাড়ি ভর্তি চার জন শক্তিশালী তাগড়া যুবক এসে মেয়েটিকে
টেনে হেচরে গাড়িতে তুলতে লাগলো ।
বাধা দিতে গেলাম,
অনেক জোড়াজোড়ি হলো,
একপর্যায়ে ওদের মধ্যে থেকে একটা লোক এসে আমার পৃষ্ঠদিকে ছুড়ি বসিয়ে দেওয়া মাত্রই মা মা করে চিৎকার করে ঘুম থেকে উঠে গেলাম।
___
0 Comments